1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

বাদামচাষি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭০ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : ছিলেন বাদামচাষি। এরই ফাঁকে স্থানীয় স্কুল ও লাইব্রেরি বোর্ডের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন।
এরপর হন সিনেটর। একপর্যায়ে রাজ্যের গর্ভনরের পদটাও হাসিল করেন। এরপর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদটি অলংকৃত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক জীবন এটাই।

১০০ বছর বয়সে এসে মারা গেছেন জিমি কার্টার। স্থানীয় সময় রোববার (২৯ ডিসেম্বর) তিনি জর্জিয়ার প্লেইনসে নিজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জিমি কার্টার যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।

বাদামচাষি থেকে প্রেসিডেন্ট

বাদাম চাষ জিমি কার্টারের পারিবারিক ব্যবসা। ১৯৫৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরতে ফিরে আসেন। বাদাম চাষে মনোযোগী হন।

স্কুলজীবনে তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন কার্টার। পরে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে সাত বছর কাজ করে সাবমেরিন কর্মকর্তাও হয়েছিলেন।

নিজের বাদাম খামারে জিমি কার্টার, ১৯৭৬ সালে তোলা ছবি

জিমি কার্টারের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে। জর্জিয়ার সিনেটর নির্বাচনের আগে তিনি ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় স্কুল ও লাইব্রেরি বোর্ডের নির্বাচনগুলোতে জয়ী হয়েছিলেন। দেই দফায় সিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এরপর ১৯৭০ সালে জর্জিয়ার গভর্নর হন। এ সময় তিনি প্রকাশ্যেই নাগরিক অধিকারের পক্ষে আরও বেশি কথা বলতে শুরু করেন।

তার শপথ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবেই বলতে চাই বর্ণ বৈষম্যের সময় পার হয়ে গেছে। ’

তিনি ক্যাপিটল ভবনে মার্টিন লুথার কিংয়ের ছবি স্থাপন করেন এবং আফ্রিকান আমেরিকানরা যেন সরকারি অফিসে নিয়োগ পান তা নিশ্চিত করেন।

১৯৭৪ সালে তিনি যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরু করেন তখন আমেরিকা উত্তাল ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে।

এ সময় তিনি নিজেকে পেশাদার রাজনীতিকে চেয়ে একজন বাদামচাষি হিসেবেই তুলে ধরেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় তোলা ছবি

শুরুতে জনমত জরিপগুলো ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে তার মাত্র চার শতাংশ সমর্থনের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত নয় মাস পর তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে হারিয়ে দেন।

দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দেন।

রিপাবলিকান সমালোচক সিনেটর ব্যারি গোল্ডওয়াটার এটিকে ‘একজন প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে লজ্জাজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। কার্টারও স্বীকার করেছিলেন যে এটা ছিলো তার জন্য খুবই কঠিন একটি সিদ্ধান্ত।

প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের নিয়ে এসেছিলেন কার্টার। তিনিই প্রথম কোনো বিশ্বনেতা যিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি হোয়াইট হাউজের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়েছিলেন যা পরে রোনাল্ড রিগ্যান সরিয়ে ফেলেন।

তার সময়ে আমেরিকার অর্থনীতি মন্দাবস্থায় পড়ে এবং এ কারণে তার জনপ্রিয়তাতেও ধস নামে। তিনি সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার পরিকল্পনা করলেও কংগ্রেসের বাধার কারণে পারেননি।

শান্তির সন্ধানে

জিমি কার্টারের মধ্যপ্রাচ্য নীতি সফল হতে শুরু করেছিল। তার সময়েই ১৯৭৮ সালে মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্যাম্প ভেডিভ চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু তার সফলতা ছিল স্বল্প সময়ের জন্য।

ইরান বিপ্লবের জের ধরে আমেরিকানদের জিম্মি অর্থাৎ ইরানে মার্কিন দূতাবাসে কূটনীতিক ও নাগরিকদের যে জিম্মি করা হয়েছিলো এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিষয়গুলোর সমাধান করা তার জন্য তিক্ত স্বাদ নিয়ে আসে।

তিনি তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং জিম্মি আমেরিকানদের মুক্ত করতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেন।

একপর্যায়ে জিম্মিদের উদ্ধার করতে গিয়ে সাত আমেরিকান নিহত হন। এ ঘটনাই তার পুনঃনির্বাচিত হওয়ার আশা শেষ করে দিয়েছিল। ১৯৮০ সালে দলীয় প্রার্থিতার দৌড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েও সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডির বিরুদ্ধে ৪১ শতাংশ পপুলার ভোট পান।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রোনাল্ড রিগ্যানের বিরুদ্ধে জিততে এটি যথেষ্ট ছিল না।

কার্টার তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের শেষ দিনে ‘জিম্মি মুক্তির বিষয়ে সফলভাবে চুক্তি হয়েছে বলে ঘোষণা দেন’।

হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নেওয়ার পর জিমি কার্টার তার সুনাম পুনরুদ্ধারে মনোযোগী হন। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে উত্তর কোরিয়ায় শান্তি মিশনে গিয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক সমস্যা ও সংকট নিয়ে কাজ করে তার কার্টার প্রেসিডেন্সিয়াল সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী ১৯৮৪ সালে চ্যারিটি শুরু করেন। তারা চার হাজারের বেশি বাড়ি সংস্কারে সহায়তা করেন। একইসঙ্গে প্লেইনসের মারানাথা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে শিক্ষকতা অব্যাহত রাখেন তিনি।

ব্যক্তি জীবনে ধার্মিক ছিলেন জিমি কার্টার। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি ধর্ম বিশ্বাস ও পাবলিক সার্ভিসকে আলাদা করতে পারেন না। আমি কখনোই ঈশ্বরের ইচ্ছা আর আমার রাজনৈতিক দায়িত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখিনি। আপনি একটা লঙ্ঘন করলে, আরেকটাও লঙ্ঘিত হবে। ’

তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন জিমি কার্টার। ২০১৫ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন জিমি কার্টার। তার বাবা-মা ও তিন বোনও একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..